আপনারা যারা সীতাকুন্ডু চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠেছেন, তারা পাহাড়ের পূর্ব-দক্ষিণ এবং উত্তর পশ্চিম সাইডের মোটা গাছ গুলোকে কখনও খেয়াল করেছেন? যদি কখনও সুযোগ হয় তাহলে দেখবেন- কিছু গাছের এপাশ-ওপাশ ছিদ্র হয়ে আছে, কিছু গাছের একপাশে বেশ গভীর ক্ষত, কিন্তু অপর পাশে নেই। আপনি এই লাইনে এক্সপারটিজ হলে সহজেই ধরে ফেলবেন ক্ষতটা কিসের?
ক্ষতগুলো বুলেটের।
আমার সোর্স এতটুকু কনফার্ম করেই বলেছেন “বুলেট গুলো 12.7×99 অথবা 12.7×108 mm ক্যালিবারের”, যেগুলো স্নাইপার রাইফেলে ব্যবহার করা হয়।
খুব সূক্ষ্মভাবে খেয়াল করলে দেখবেন, বুলেটের ছিদ্র থাকা গাছগুলোর অপজিটে স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড বা 45° কিংবা 90° এঙ্গেলে ৪০০/৬০০ মিটারের কোনো ব্যারিয়ার নেই। অর্থাৎ গাছটিকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নির্ধারণ করে প্রাকটিস হয় এবং আসলেই হয়।
চট্টগ্রামের স্থানীয় যে কেউ ভাল জানবেন, রাতের বেলা এই পাহাড়ে উঠতে গেলে স্থানীয় ছেলেপেলেরা বাঁধ সাধে।
আধুনিক বিশ্বে ক্রস বর্ডার ইন্টারভেনশন বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে পৃথিবীর শক্তিশালি দেশগুলো শত্রুদেশ বা যে দেশকে তারা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়, সেই দেশের অভ্যন্তরে নিজেদের এজেন্ট, সিস্টার অর্গানাইজেশন বা কন্ট্রোল অপোজিশন তৈরি করে রাখে। যাতে করে প্রয়োজনের মুহূর্তে এদেরকে একটিভ করে স্বার্থসিদ্ধি করা যায়।
পৃথিবীর পরাশক্তি দেশসমূহ যেমন- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারত, ফ্রান্স, ব্রিটেন সহ অন্যান্যরা এই পদ্ধতিতে আজও তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে নিও-কলোনিয়ালিজমের উত্থান ঘটাচ্ছে দেশটির সবচেয়ে স্ট্র্যাটেজিক এরিয়াকে টার্গেট করে। এমনকি যদি সেটা জিওগ্রাফিক্যালি ইম্পরট্যান্ট হয় তবুও।
এমন বহু উদাহরণ থাকলেও এশিয়ার ভেতরে ইন্দোনেশিয়া থেকে হাতছাড়া হয়ে সদ্য স্বাধীন হওয়া পূর্ব তিমুর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণই বটে।
পূর্ব তিমুরের ইতিহাস আপনারা সবাই জানেন, যেখানে মুসলিম খ্রিস্টান সমানে সমান বসবাস করত কিন্তু পর্তুগালে বিপ্লবের পর থেকে এই অঞ্চলে জিওপলিটিক্যাল আর্থকুয়াক সংগঠিত হতে শুরু করে।
খুব বেশি ইতিহাস নাড়াচাড়া করলে কনসান্ট্রেশন ব্রেক হবে তাই পূর্ব তিমুর স্বাধীন হওয়ার উল্লেখযোগ্য কয়েকটা পয়েন্ট সংক্ষেপে বলি
৭৫’ পরবর্তী সময় থেকেই পূর্ব তিমুর স্বাধীন হওয়ার পথ সুগম হতে থাকে এবং সেখানে ইন্দোনেশিয়ান আর্মির পক্ষে এবং বিপক্ষে আর্মড উইং’ও তৈরি হয়। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য UDT এবং FRETELIN
ইউডিটি ছিল পূর্ব তিমুরকে ইন্দোনেশিয়ার সাথে সংযুক্তকরন করতে ইন্দো আর্মির পক্ষে এবং ফ্রেটিলিন ছিল স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন।
বলে রাখা ভাল, ৭৫’ এর আগেও ফ্রেটিলিন ছিল কিন্তু তখন ফ্রেটিলিনের আন্ডারে আরো কয়েকটা সিস্টার্স অর্গানাইজেশন ফ্রেটিলিনের ন্যারেটিভ সার্ভ করত। অর্থাৎ ফ্রেটিলিন নিজে কিছু করত না এবং তাদের কোনোপ্রকার সশস্ত্র মুভমেন্টও ছিল না।
এই ফ্রেটিলিনকে ইন্দোনেশিয়ান আর্মি পরিচয় করিয়েছিল কমিউনিস্ট হিসেবে। তাদের দাবি ছিল ফ্রেটিলিন পূর্ব তিমুরের স্বাধীনতা নিয়ে বসলে তারা কমিউনিস্টপন্থী চীন রাশিয়ার পার্পাস সার্ভ করবে এবং এতে করে যুক্তরাষ্ট্র বা তার এলাইদের এই অঞ্চলে থ্রেট তৈরি হবে। তাই ইন্দোনেশিয়ান আর্মি পুরোদমে পূর্ব তিমুর আক্রমণ শুরু করলো।
এটাই ছিল ভুল। কারন ফ্রেটিলিন কোনোভাবেই কমিউনিস্ট আদর্শ অনুসরণকারী সংগঠন ছিল না। তারা ছিল ক্যাথলিক ক্রিশ্চিয়ান এবং খ্রিষ্ট ধর্মের পার্পাস সার্ভকারী আর্মড মিলিশিয়া গ্রূপ। তাদের পেছনে ক্রিশ্চিয়ান ধর্মযাজকরা কোটি কোটি ডলার ইনভেস্ট করেছিল।
তাহলে এখন সহজেই প্রশ্ন উঠবে, ফ্রেটিলিনকে কমিউনিস্ট হিসেবে সাব্যস্ত করে মার্কিন অস্ট্রেলিয়ান কোয়ালিশনের লাভটা হলো কি?
লাভ হলো ইন্দোনেশিয়ান আর্মিকে দিয়ে পূর্ব তিমুর আক্রমণ করানো এবং তিমুরের অভ্যন্তরে আর্মি পন্থী মিলিশিয়া তৈরি করে সংঘাত বাঁধানো। অতঃপর সেই সংঘাতের কারনে সংগঠিত ম্যাসিভ ব্ল্যাডশেডকে পুঁজি করে জাতিসংঘে তিমুরের স্বাধীনতার বিষয়ে প্রস্তাবনা পাশ করানো, যার আড়ালে ছিল তিমুরকে ক্রিশ্চিয়ান স্টেটে পরিণত করার ভয়ঙ্কর চক্রান্ত।
ফ্রেটিলিন যদি কমিউনিস্টপন্থী দলই হবে তাহলে ৯৯’সালে যখন জাতিসংঘের শান্তি মিশন টিম INTERFET পূর্ব তিমুরে আসে, তারা কেনো ফ্রেটিলিনকে অভিবাদন জানায় এবং ইন্দোনেশিয়ান আর্মিপন্থী সংগঠনকে নিউট্রলাইজ করতে থাকে? অর্থ্যাৎ, পুরোটাই বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই কাজ করেছে।
এবার বলি বাংলাদেশের সাথে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুরকে দখল করার প্যাটার্ন আপনি কিভাবে মিলাবেন?
ভারত, ই স ক ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম
ওকে, ই স ক নে র নাম শুনে নিশ্চয়ই আপনি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছেন। এটাই ভুল। ইসকনের নাম শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে তাদের এক্টিভিটিস। মুহূর্তেই আমাদের মানসপটে স্মৃতি একে যায় যে, ইসকন একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন, যারা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র কতৃক পরিচালিত― এই পুরো ধারনাই ভুল।
টু বি হনেস্ট, ইসকন কোনো হিন্দুত্ববাদী সংগঠন নয় এবং ভারত একা এটাকে রান করায় না। বরং ইসকন একটি র্যাকেট, একটি বিশাল সিন্ডিকেট, সর্বোপরি ডিপ স্টেটের একটি সিস্টার অর্গানাইজেশন। যেখানে হিন্দু, মুসলিম, ক্রিশ্চিয়ান সবাই আছে।
youtweb link :
এখন হয়ত আপনি বলতে পারেন, সম্প্রতি হাজারী গলির যে কাহিনী ঘটলো সেটাকে বিশ্লেষণ করলে এটাই প্রমান হয়, ই স ক ন হি ন্দু ত্ব বা দী সংগঠন।
তাহলে হাজারী গলির কাহিনী একটু খুলে বলি
হাজারী গলি এবং পাথরঘাটার ফাদারবুদ্র হসপিটাল ইসকনের স্বর্গরাজ্য
হাজারী গল্লির ভেতরের অবস্থান বাহির থেকে কারো কল্পনা করা সম্ভব নয়। এখানে ভিতরে এক টুকরো ইসকন রাজ্য। হি ন্দু রাজ্য হলেও আমার কোন আফসোস থাকতোনা কিন্তু এটা হি ন্দু রাজ্য নয় বরং জ ঙ্গি সংগঠন ই স ক নে র রাজ্য।
ই স ক নে র সবচেয়ে বড় শত্রু প্র্যাকটিসিং হি ন্দু রা। এজন্য অনেক সরলমনা হি ন্দু ও ইসকনকে কে পছন্দ করেনা।
হাজারী গলিতে ইসকন টিকে আছে কিছু মুসলিম মেডিসিন এবং গোল্ড ব্যবসায়ীর জন্য। হাজারি গলি থেকে এদের কে নির্মুল করার একমাত্র প্রসেস হচ্ছে মুসলিম ঔষধ ব্যবসায়ীরা এবং গোল্ড ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে ঔষধ আর গোল্ড ক্রয় না করা। এছাড়াও এখানে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার বিজনেস হয়। যার ৮০% গ্রাহক মুসলিমরা অথচ সেলারদের কিন্তু ৯৫% হি ন্দু। আবার এই হি ন্দু দে র মাঝে ৮০% ই স ক নে র।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে, মুসলিম গ্রাহকরা হাজারী গলির মেডিসিন শপ বাইপাস করলেই তো হয়, করছে না কেনো??
এখানেই চলে আসছে পাথরঘাটার ফাদারব্রুড হসপিটাল
এটা কিন্তু ক্রি শ্চি য়া ন মিশনারীর হসপিটাল, কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন উক্ত হসপিটালের বেশিরভাগ কর্মচারী ই স ক নে র
সরলমনা হি ন্দু, মুসলিম বা অন্য ধর্মের গ্রাহকরা তাদের থেকে বিরাট বেনিফিট পায়। যেমন ধরুন- একটা ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম বা এমআরআই টেস্ট এর জন্য যে টাকা প্রয়োজন, সেটা নামমাত্র মূল্যে করিয়ে দেওয়া। আর মেডিসিনের জন্য ছোট্ট কাগজে নাম নাম্বার লিখে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাজারী গলির নির্দিষ্ট সেইসব ই স ক নে র দোকানে। যেখান থেকে তারা খুব সাশ্রয়ে মেডিসিন নিতে পারে।
এই কাজটা কেন করা হয় জানেন? কারন মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো, মানুষ সিমপ্যাথির চেয়ে এমপ্যাথি বেশি খায়। অর্থাৎ পুরো সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার। আর এই কাজে তাদেরকে বহু মুসলমানও হেল্প করে।
কিন্তু এত কথার মূল কথা হলো ই স ক ন যে একটা সিস্টার অর্গানাইজেশন- সেটা বুঝবেন কিভাবে?
দেখুন, ই স ক ন কে আমাদের সাথে উগ্র হি ন্দু ত্ব বা দী এবং ভারতীয় ইন্টিলিজেন্সের সহায়ক সংগঠন হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলেও এটা পুরোপুরি সত্য নয়। বরং আংশিক সত্য।
ইসকন যদি হিন্দুদের সংগঠনই হতো তাহলে এর জন্ম হতো ভারতে, অথচ এর জন্মেরই ঠিক নাই। অন্তত ভারত যে এর জন্মস্থান নয়, তা শতভাগ নিশ্চিত। বরং যতটুকু জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ইসকনের উত্থান
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অস্টিন, ডালাস, এছাড়াও মিশিগান স্টেট সহ বিভিন্ন জায়গায় ইসকনের বহু পুরানো টেম্পল আছে। কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে এসবের সাথে হি ন্দু ধ র্মে র দূরতম কোনো সংযোগ পাওয়া যায়না। তাহলে কালের পরিক্রমায় তারা কিভাবে হি ন্দু হয়ে গেলো? তার চেয়ে বড় প্রশ্ন এই সাবকন্টিনেন্টে কেন তাদেরকে ইনজেক্ট করা হলো?
দেখুন, উপরে আমি বলেছিলাম পূর্ব তিমুরে ফ্রেটিলিনকে পশ্চিমারাই কমিউনিস্ট ব্যানার দিয়েছিল, কারন ওখানে কমিউনিস্ট ব্যানার দিলে যুদ্ধটা বাঁধবে
ঠিক একইভাবে এই অঞ্চলে ইসকনকে উ গ্র হি ন্দু ত্ব বা দে র মালা পরিয়ে একবার ঢুকিয়ে দিতে পারলেই ঝামেলা বাঁধবে কারন এখানে এবসুলেট সলিড অপোজিশন ‘মুসলমানরা’ আছে। খুব সহজেই যেকোনো একজনের ইমোশন্সকে ট্রিগার করে ঝামেলা বাঁধানো যাবে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, বিগ ব্রাদার তাহলে এখানে ভারতকে কেন খেলাচ্ছে?
আমরা জানি ভারতে প্রায় ৭৯ টি ইসকন টেম্পল আছে। অর্থাৎ ভারতকে স্টেশন মাস্টার হিসেবে রাখা হয়েছে এবং “ভারতকে এই মূল ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সবকিছু তুমিই অপারেট করবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ম্যাসিভ ব্রেকথ্রু দিতে পারলে কন্ট্রোলিং পাওয়ার তোমার হাতেই দেওয়া হবে। তুমি চাইলে ব্রেক চাপবে, চাইলে এক্সেলরেটর চাপবে। দ্যাটস ইওর চয়েস”। আর ভারত ঠিক সেই কাজটিই করছে। তাদের নির্দেশে, অর্থায়নে পাহাড়ে ট্রেনিং হয় আবার দিনের বেলায় সব সাধু। সাধারণ মানুষকে ঘিরে তাদের প্রচুর কর্মসূচি রয়েছে, যা আপনার আমার কল্পনারও বাইরে। তারা এতটা প্রফেশনালি সবকিছু হ্যান্ডেল করে যা নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। গতকাল সীতাকুন্ডু পাহাড়ে স্নাইপিং প্রাকটিস নিয়ে যে লিখাটা দিয়েছিলাম তা এদেরই কর্মসূচির অংশ।
আমরা কল্পনাও করতে পারছি না বাংলাদেশ কতটা ক্রান্তিলগ্ন পার করছে। আমাদের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো, ই স ক ন কে উ গ্র হি ন্দু ত্ব বা দি না বলে জ ঙ্গি সংগঠন বলা। কোনো ধর্মীয় ট্যাগ ব্যবহার না করা। একইসাথে ই স ক ন এবং হি ন্দু গুলিয়ে না ফেলা। ই স ক ন মানেই হি ন্দু না, ই স ক ন একটি মাল্টিটাস্কিং পারফেকশনিস্ট অর্গানাইজেশন, যাদের লবিং বহু গভীরে।