প্রিয় ভাইয়েরা আজ আপনাদের বারমুডায় গায়েব হয়ে যাওয়া কিছু জাহাজ আর বিমানের গল্প জানাবো। তবে পড়া সময় শুধু রহস্যে বুঁদ না হয়ে একটু অনুসন্ধানী মন নিয়ে পড়বেন। কতটা গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বুঝতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে মনোযোগ দিতেই হবে।
যাত্রী গায়েব…জাহাজ উপকূলে, ডুবে যাওয়া জাহাজ ফেরত।
এটাও কি বিশ্বাসযোগ্য? যদি আপনাকে বলা হয়- একটি জাহাজ বারমুডার সমুদ্র সীমানায় দাঁড়ানো, কিন্তু যাত্রী এবং ক্যাপ্টেন গায়েব!! খানার টেবিলে এমনভাবে খানা গুছিয়ে রাখা; দেখলে মনে হবে- হাত ধোঁয়ার জন্য মনে হয় তারা উঠে গেছে। না আছে দূর্ঘটনার চিহ্ন, আর না কোন লুটপাটের নিদর্শন। নিরব সমুদ্রের মাঝে হঠাৎ খানা পিনা রেখে তারা কার মেহমান হয়ে গেছে?!! ঘটনাটি ঘটেছে “কেরল ডীরিং(Caroll Deering)” নামক জাহাজের সাথে। তীরে জাহাজের সম্মুখভাগ বালুতে গাড়া ছিল আর পেছনের অংশ পানিতে ছিল। খানার টেবিলে খানা রাখা ছিল।
চেয়ারগুলি কিছু পেছনের দিকে ঝুঁকে থাকা অবস্থায় ছিল। মনে হবে, যাত্রীরা কোন অলৌকিক কিছু দেখে আপন আপন চেয়ার ছেড়ে উঠে এসেছিল এবং পরে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা আর পারেনি। চেয়ার টেবিলে খানা আর ফলফ্রুট দেখে কোন হাঙ্গামা বা দুর্ঘটনার চিহ্ন বা নিদর্শন উপলব্ধি হয়না। জাহাজের অবস্থা দেখেও এ কথা মনে হয়না যে, এখানে লুটপাট বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আশ্চর্যের বিষয়- এতবড় জাহাজকে তীরে কে আনল?? আর যাত্রীরাই বা কিরূপ দুর্ঘটনার স্বীকার হল?? কেননা এত বড় জাহাজ এত অল্প পানিতে আসা অসম্ভব। জাহাজটি ছিল “জি জি ডেয়ারিং কোম্পানি অফ পোর্টলেন্ড” এর মালিকানায়।
হেরি কোনোভার( Herry Conover) প্রসিদ্ধ মার্কিন কোটিপতি, সুদক্ষ জঙ্গি পাইলট, সামুদ্রিক জাহাজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ক্যাপ্টেন ১৯৫৮ সালে তার সাথীদের নিয়ে বারমুডার অতল গহবরে গায়েব হয়েছে। কিন্তু এইবার শুধু যাত্রীরাই নিখোঁজ হয়েছে। কেননা পরবর্তীতে তাদের জাহাজ ফ্লোরিডার সী-বিচ থেকে ৮০ মাইল উত্তরে এক কিনারায় যাত্রীবিহীন অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ ধরনের কোন সংবাদও কি আপনি এ পর্যন্ত শুনেছেন যে, কোন জাহাজ সম্পূর্নরূপে সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়েছে এবং কিছুদিন পর তা পূর্বাবস্থায় কোন কিছু নষ্ট হওয়া ছাড়াই উপরে এসে গেছে। একটি জাহাজ বারমুডার ট্রায়াঙ্গলের সীমানায় চলছিল। সমুদ্রের ঢেউ একে নিয়ে খেলছিল। কিন্তু তাতে কেউ ছিলনা। ভেতরে সম্পূর্ণ খালি ছিল। না ক্যাপ্টেন, না যাত্রী আর না কোন কর্মচারী। জাহাজের নাম “লাদাহামা”। এস. এযটেক নামক জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং কর্মচারীরা যে দৃশ্য অবলোকন করেছিল, তা নিম্নরূপ :
“সবকিছু ঠিকঠাক, সঠিক জায়গায় বিদ্যমান। না কেউ কিছু উঠিয়েছে, না ছিন্নভিন্ন করেছে। না আছে লুটমারের চিহ্ন, না কোন দুর্ঘটনার আলামত। এমনকি ক্যাপ্টেনের ব্যবহৃত কলম আর দূরবীন পর্যন্ত সঠিক জায়গায় ছিল।” এথেকেও অবিশ্বাস্য খবর হচ্ছে- সামুদ্রিক জাহাজ “রানী”র রেকর্ডে এটি ডুবে যাওয়া জাহাজের তালিকায় ছিল যাকে ইটালির রেক্স(Rex) নামক জাহাজের যাত্রী এবং কর্মচারীরা ডুবে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষ করেছিল।
চিন্তার বিষয়……কে এই গায়েবকারী?? গায়েব করার পর জাহাজ থেকে কোন মূল্যবান জিনিস আটক করেনা, কারো কাছে কোন দাবিও পেশ করেনা। বরং চিরদিনের জন্য নিজের কাছে নিয়ে যায়। এরপর যায়ই বা কোথায়?? এমন সব ঘটনা; যার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যাও আজ পর্যন্ত কেউ দিতে পারেনি। বারমুডার সমুদ্রের অভ্যন্তরের সকল ঘটনাই কি আকস্মিক??! নাকি সুসংগঠিত কোন শক্তি নির্দিষ্ট কোন টার্গেট লক্ষ্য করে এসব ঘটনার জন্ম দিচ্ছে??!!!!
বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে নিরব। বরং তাদের চুপ করিয়ে দেয়া হয়েছে। গবেষণার সকল দরজা বন্ধ। সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। বরং মৃত্যুর হুমকি। তাহলে এসব কেন?? গবেষকদের কাছে একটি কথা স্পষ্ট যে, সামুদ্রিক ঝড়-তুফান বা স্বাভাবিক দুর্ঘটনার সাথে এগুলোর কোন সম্পর্ক নেই। এমনও কখনো হয়নি যে, জাহাজের সকল মুল্যবান সম্পদ আসবাবপত্র লুট করা হয়েছে। পাশাপশি গায়েবকৃত জাহাজ থেকে আশপাশের হেডকোয়ার্টারগুলিতেও কোন সাহায্যের বার্তা প্রেরণ করা হয়নি। তবে কখনো কখনো কিছু বার্তা পৌছেছিল, যা সম্পূর্ণ অস্পষ্ট ছিল।
এ সকল অস্পষ্ট বার্তার গবেষণা ও তদন্ত করে গবেষকরা একটি ফলাফলে ঠিকই উন্নিত হয়েছেন যে, এ ঘটনাগুলি খুবই দ্রুততার সাথে ঘটানো হয়েছে এবং ঘটনার সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন ও যাত্রীদের উপর হঠাৎ ভয়ানক এক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
১৯২৪ সালে জাপানী মালবাহী জাহাজ “রিভোকোমারো(Rivoco Maro)” গায়েব হওয়ার পূর্বে উপকূল হেডকোয়ার্টারে এই বার্তা প্রেরণ করে-“আমাদের উপর এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে……। ভয়….ভয়…..। দ্রুত আমাদের সাহায্য কর।”
তবে ১৯৬৭ সালে গায়েব হওয়া ভ্রমণ জাহাজ “ভিচক্রাফট” থেকে সর্বশেষ যে বার্তা পৌছেছিল, তা জাহাজের মালিক নিজে(তখন সে জাহাজের মধ্যে ছিল) নিকটস্থ হেডকোয়ার্টারে নিম্নোক্ত বার্তা দিয়েছিলঃ-
“জাহাজ পানির নিচে কোন অজানা বস্তুর সাথে ধাক্কা খেয়েছে ….। পেরেশানীকর কোন কিছু সামনে আসেনি….। জাহাজে কোনরূপ সমস্যা হয়নি ….। তবে সবকিছু ঠিকঠাকরূপে কাজ করছেনা….।” এই বার্তা পাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে বিশেষ সাহায্য টিম জাহাজের স্থানে পৌছেছিল। কিন্তু এই তিন মিনিটের মধ্যেই জাহাজ তার মালিক ও মালিকের বন্ধু (মার্কিন সিনেট জর্জ চার্চের পাদ্রী ফোর্চ লোডার ডেল) সহ যাত্রীদেরকে নিয়ে কোন অজানা স্থানে চলে গেছে। ঠিক পনের মিনিট পরেই আরো একটি টিম ওখানে পৌঁছে আশপাশের দুইশ কিঃমিঃ এলাকাজুড়ে তন্ন তন্ন করে খোঁজাখুঁজির পরও এর কোন হদিস তারা বের করতে সক্ষম হয়নি।
চলবে,,,,,,,
প্রিয় ভাইয়েরা গত পর্বে তেমন সাড়া পাইনি। আপনারা মনে হয় লিখাটা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন!! লিখাটা পড়েন কি-না প্লিজ জানাবেন। না পড়লে ভাবছি বন্ধ করে দিবো।
ভাই চলবে,
আমি এই সাইটের নিয়মিত পাঠক
Shmiraz 886@gmail.com