সারা পৃথিবীতে সবচে’ বড় যে ধর্মযুদ্ধ হবে সেটা হবে হিন্দুস্তান তথা ভারতের হিন্দুদের সাথে মুসলমানদের চুড়ান্ত যুদ্ধ বা গাজওয়াতুল হিন্দ যা সমস্থ জ্ঞানি ইসলামি স্কলার এবং আলেম উলামা এবং পন্ডিত ঠাকুররাও জানে এমনকি জানেন কাফের মুশরেক ইহুদি নাসারাও। মুসলমানদের জন্য এটা খুব বড় ও সম্মানিত জিহাদ এবং এই সম্মানিত জিহাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই সম্মানিত জিহাদে যাঁরা শরীক থাকবেন, উপস্থিত থাকবেন, অংশ গ্রহণ করবেন তাঁরা প্রত্যেকেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবেন, জান্নাতী হবেন। সুবহানাল্লাহ!
.
এই সম্মানিত জিহাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,- “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের থেকে হিন্দুস্তান তথা ভারতের জিহাদ সম্পর্কে ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন। যদি আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ উপস্থিত হই এবং শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করি তাহলে আমি হবো সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। আর আমি যদি সম্মানিত জিহাদ মুবারক থেকে ফিরে আসি (বিজয়ী বেশে) তাহলে আমি হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!
.
দলীল-
√ মুসনাদে আহমদ ২/২২৮,
√ মুস্তাদরকে হাকিম ৩/৫১৪
√ হিলইয়াতুল আওলিয়া ৮/৩১৬
√ আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াহ ৬/২৪৯
√ আন নিহায়া ফিল ফিতান ১/৩ ইত্যাদি
.
হাদীস শরীফে অন্য বর্ণনায় এসেছে-বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের থেকে হিন্দুস্তান তথা ভারতের সম্মানিত জিহাদ মুবারক সম্পর্কে ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি মুবারক গ্রহণ করেন। যদি আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক পাই তাহলে আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ আমার পবিত্র জান বিলিয়ে দিবো এবং আমার মাল-সম্পদ ব্যয় করবো। আর আমি যদি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করি তাহলে আমি হবো সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। আর আমি যদি সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার থেকে ফিরে আসি (বিজয়ী বেশে) তাহলে আমি হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!
.
দলীল-
√ নাসাঈ শরীফ
√ সুনানে সাঈদ ইবনে মানছূর ২/১৪৫
√ মুসনাদে বাযযার ১৫/৩০২,
√ সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ ৪/৩০২,
√ আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী ৯/১৭৬ ইত্যাদি
.
উপরোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয় থেকে হিন্দুস্তান তথা ভারতের সম্মানিত জিহাদ মুবারকের গুরুত্ব, তাৎপর্য, ফাযায়িল, ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এই জিহাদ মুবারকের এতোই গুরুত্ব, তাৎপর্য, ফাযায়িল, ফযীলত, বুযুর্গী, সম্মান মুবারক যে, স্বয়ং রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম থেকে এই জিহাদ মুবারকের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
.
সিয়া ছিত্তার অন্যতম কিতাব “নাসাঈ শরীফে” কিতবুল জিহাদ অধ্যায়ে একটা পরিচ্ছদ আছে যার নাম হচ্ছে “গাযওয়ায়ে হিন্দ” বা হিন্দুস্তানের জিহাদ। এই অধ্যায়ে গাযওয়ায়ে হিন্দের বিষয়ে অনেকগুলো হাদীস শরীফ বর্ণিত আছে।
একটা হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে,
ﻋَﻦْ ﺣَﻀْﺮَﺕْ ﺛَﻮْﺑَﺎﻥَ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟـٰﯽ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﻮْﻟـٰﻰ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻋِﺼَﺎﺑَﺘَﺎﻥِ ﻣِﻦْ ﺍُﻣَّﺘِﻰْ ﺍَﺣْﺮَﺯَﻫُـﻤَﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻋِﺼَﺎﺑَﺔٌ ﺗَﻐْﺰُﻭﺍﻟْـﻬِﻦْﺩَ ﻭَﻋِﺼَﺎﺑَﺔٌ ﺗَﻜُﻮْﻥُ ﻣَﻊَ ﻋِﻴْﺴَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻣَﺮْﻳَـﻢَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻤَﺎ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ .
অর্থ: রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার খাদিম হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক আমার উম্মতদের দু’টি দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন। আর সেই দুটি দল হচ্ছেন, এক. যাঁরা হিন্দুস্তান বা ভারতের মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। দুই. আর অপর দলটি হচ্ছেন, যাঁরা হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম-উনার সাথে থাকবেন।” সুবহানাল্লাহ!
√ নাসাঈ শরীফ- কিতাবুল জিহাদ- বাবু গাযওয়াতুল হিন্দঃ হাদীস নম্বর ৩১৭৫।
√ মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৮।
√ আল তারীখুল কাবীর লিল বুখারী ৬/৭৩।
√ তাহযীবুল কামাল ৩৩/১৫২।
√ সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৮০।
√ মুখতাছারে তারীখে দিমাশক্ব ৬/৪৬৭।
.
হিন্দুস্তান তথা ভারতের মুশরিকদের সাথে যেই জিহাদ হবে সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ যাঁরা শহীদ হবেন উনারা হবেন সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। সুবহানাল্লাহ!
.
বর্তমান প্রেক্ষাপটে গাযওয়ায়ে হিন্দ কি আসন্ন? বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আজ থেকে ৮৮৬ বছর পূর্বে হিজরী ৫৪৮ সালে মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে এক ক্বাসিদা শরীফ (কবিতা) রচনা করেন। কালে কালে উনার এই ক্বাসিদা শরীফের এক একটি ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেছে আশ্চর্যজনকভাবে। ইংরেজ শাসনের ক্রান্তিকালে এ ক্বাসিদা শরীফ মুসলমানদের মধ্যে মহাআলোড়ন সৃষ্টি করে। এর অসাধারণ প্রভাব লক্ষ্য করে ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এ ক্বাসিদা শরীফ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
.
যাই হোক আপনাদের এই ক্বাছীদা শরিফের ৩৩ থেকে ৪৮ তম প্যারা পর্যন্ত লক্ষ করার অনুরোধ রইলো এবং যেনো উপলব্দি করতে পারেন তার জন্যে দোয়া ও করি।
(প্যারাঃ ৩৩)
কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ
খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ।
(প্যারাঃ ৩৪)
পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা আর নগ্নতা বেহায়াপনামি
ডোবাবে তোমাদের, খোদার কঠোর গজব আসিবে নামি।
(প্যারাঃ ৩৫)
ধ্বংস নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে
হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে।
(প্যারাঃ ৩৬)
মুসলমানের জান-মাল হবে খেলনা-মুল্যহত
রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর স্রাতের মত।
(প্যারাঃ ৩৭)
এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের
ধন সম্পদ আসিবে হাতে দখলে মুমিনদের।
(প্যারাঃ ৩৮)
অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের
তাহাদের ধনসম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের।
(প্যারাঃ ৩৯)
হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি
ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি।
(প্যারাঃ ৪০)
মুসলিম নেতা-অথচ বন্ধু কাফেরের তলে তলে
মদদ করিবে অরি কে সে এক পাপ চুক্তির ছলে।
(প্যারাঃ ৪১)
প্রথম অক্ষরেখায় থাকিবে শীনে’র অবস্থান
শেষের অক্ষরে থাকিবে নূন’ ও বিরাজমান
ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের
ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক জালিম হিন্দুদের।
(প্যারাঃ ৪২)
মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ
ঝঞ্জারবেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ
(প্যারাঃ ৪৩)
সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া প্রচ- আলোড়ন
‘উসমান’ এসে হাতে নেবে জেহাদের বজ্র কঠিন পণ
(প্যারাঃ ৪৪)
‘সাহেবে কিরান-‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে নিয়ে শমসের
খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধে
টীকাঃ এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা বলা হয়েছে। শনি ও বৃহস্পতিগ্রহ অথবা শুক্র ও বৃহস্পতি গ্রহের একই রৈখিক কোণে অবস্থানকালীন সময়ে যে যাতকের জন্ম অথবা এ সময়ে মাতৃগর্ভে যে যাতকের ভ্রুনের সঞ্চার ঘটে তাকে বলা হয় সাহেবে কিরান বা সৌভাগ্যবান। সেই মহান সেনাপতির উপাধি হবে‘হাবীবুল্লাহ’।
(প্যারাঃ ৪৫)
কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীরগাজীদের পদভারে
ভারতের পানে আগাইবে তারা মহারণ হুঙ্কারে
টীকাঃ আক্রমণকারীরা ভারত উপমহাদেশের হিন্দু দখলকৃত এলাকার বাইরে থাকবে এবং হিন্দু দখলকৃত এলাকা দখল করতে হুঙ্কার দিয়ে এগিয়ে যাবে।
(প্যারাঃ ৪৬)
পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাজীয়েদ্বীন’
যুদ্ধে জিনিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডিন
(প্যারাঃ ৪৭)
মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান
বিজয় করিয়া কবজায় পুরাআনিবে হিন্দুস্তান
টীকা: হিন্দুস্তান সম্পূর্ণরূপে মুসলমানদের দখলে আসবে।
(প্যারাঃ ৪৮)
.
বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের দুশমন
.
অঝোর ধারায় হবে মহান আল্লা’র রহমত বর্ষণ।
.
সুতরাং এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ অবশ্যই মুসলমানগম মহাবিজয় অর্জন করবেন। সুবহানাল্লাহ! আর যাঁরা বিজয়ী বেশে এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক থেকে প্রত্যাবর্তন করবেন উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত করবেন। অর্থাৎ উনারা সুনিশ্চিত জান্নাতী হবেন। সুবহানাল্লাহ!
.
এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ মুসলমানগন যে মহাবিজয় অর্জন করবেন সেটা হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বর্ণিত হাদীছ শরীফ থেকেই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ আবার ইসলামী হুকুমত কায়েম হবে। মুসলমানগন আবার নিজেদের অধিকার ফিরে পাবে। বিধর্মীদের মূলৎপাটন হবে।
.
